22
জেরুশালেমের পাপের বিচার
1 সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল,
2 “হে মানবসন্তান, তুমি কি তার বিচার করবে? তুমি কি এই রক্তপাতের নগরের বিচার করবে? তাহলে তার জঘন্য কাজকর্মের বিষয় নিয়ে তার মুখোমুখি হও 3 এবং বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, হে নগর যে নিজের মধ্যে রক্তপাত করে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনে এবং প্রতিমা তৈরি করে নিজেকে অশুচি করে, 4 রক্তপাত করে তুমি দোষী হয়েছ এবং প্রতিমা তৈরি করে তুমি অশুচি হয়েছ। তুমি তোমার দিন কাছে নিয়ে এসেছ এবং তোমার শেষকাল উপস্থিত হয়েছে। সেইজন্য জাতিগণের কাছে তোমাকে ঘৃণ্য করব এবং সমস্ত দেশের কাছে তোমাকে হাসির পাত্র করব। 5 হে জঘন্য নগর, যা অশান্তিতে পূর্ণ, যারা কাছে আছে আর যারা দূরে আছে তারা তোমাকে বিদ্রুপ করবে।
6 “ ‘দেখ ইস্রায়েলের প্রত্যেক শাসনকর্তা রক্তপাত করবার জন্য কেমন করে তার ক্ষমতা ব্যবহার করছে। 7 তোমাদের মধ্যেই লোকে মা-বাবাকে তুচ্ছ করেছে; বিদেশিদের অত্যাচার করেছে আর অনাথ ও বিধবাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। 8 তুমি আমার পবিত্র জিনিসগুলি অশ্রদ্ধা করেছ এবং আমার বিশ্রামবারগুলিকে অপবিত্র করেছ। 9 তোমার মধ্যে এমন এমন লোক আছে যারা অন্যের বদনাম রটিয়ে তাদের রক্তপাত করায়; পাহাড়ের উপরের পূজার জায়গায় খাওয়াদাওয়া করে ও ঘৃণ্য কাজ করে। 10 তোমার মধ্যে এমন এমন লোক আছে যারা বাবার বিছানাকে অসম্মান করে; ঋতুমতী মহিলার সঙ্গে মিলিত হয়, যখন তারা অশুচি। 11 তোমার মধ্যে কেউ তার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ঘৃণ্য কাজ করে, আরেকজন নির্লজ্জভাবে তার ছেলের বৌকে অশুচি করে, এবং আরেকজন তার বোনের সঙ্গে ব্যভিচার করে, যে তার নিজের বাবার মেয়ে। 12 তোমার মধ্যে রক্তপাত করার জন্য লোকে ঘুস নেয়; তারা বাড়তি সুদ নিয়ে থাকে এবং জুলুম করে প্রতিবেশীর কাছ থেকে অন্যায় লাভ করে। এবং তুমি আমাকে ভুলে গিয়েছ, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।
13 “ ‘তুমি যে অন্যায় লাভ করেছ এবং তোমার মধ্যে যে রক্তপাত করেছ তার জন্য আমি নিশ্চয়ই হাততালি দেব। 14 আমি যেদিন তোমার কাছ থেকে হিসেব নেব সেদিন কি তোমার সাহস থাকবে? আমি সদাপ্রভু এই কথা বললাম এবং আমি তা করবই। 15 আমি তোমার লোকদের বিভিন্ন জাতি ও দেশের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেব এবং তোমার অশুচিতা দূর করব। 16 জাতিগণের চোখে তুমি যখন অপবিত্র হবে, তুমি জানবে আমিই সদাপ্রভু।’ ”
17 তারপর সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল: 18 “হে মানবসন্তান, ইস্রায়েল কুল আমার কাছে খাদের মতো হয়েছে; তারা সবাই যেন রুপো খাঁটি করবার সময় হাপরের মধ্যে খাদ হিসেবে পড়ে থাকা পিতল, দস্তা, লোহা ও সীসা। 19 অতএব সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ‘তোমরা সবাই খাদ হয়ে গিয়েছ বলে আমি জেরুশালেমে তোমাদের জড়ো করব। 20 লোকে যেমন রুপো, পিতল, লোহা, সীসা ও দস্তা গলাবার জন্য হাপরের মধ্যে একত্র করে, তেমনি করে আমার ভীষণ অসন্তোষ ও ক্রোধে আমি তোমাদের নগরের মধ্যে রেখে গলাব। 21 আমি তোমাদের জড়ো করে আমার জ্বলন্ত ক্রোধে ফুঁ দেব আর তোমরা নগরের মধ্যে গলে যাবে। 22 হাপরের মধ্যে যেমন রুপো গলে যায় তোমরাও তেমনি তার মধ্যে গলে যাবে, আর তোমরা জানবে যে, আমি সদাপ্রভুই তোমাদের উপর আমার ক্রোধ ঢেলে দিয়েছি।’ ”
23 আবার সদাপ্রভুর বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হল, 24 “হে মানবসন্তান, তুমি দেশকে বলো, ‘তুমি একটি দেশ যার উপর আমার ক্রোধের দিনে পরিষ্কার বা বৃষ্টি হয়নি।’ 25 তাদের শাসনকর্তারা* 22:25 হিব্রুতে, ভাববাদী সেখানে ষড়যন্ত্র করে; তারা গর্জনকারী সিংহের মতো শিকার ছেঁড়ে; তারা লোকদের গ্রাস করে, ধনসম্পদ ও দামি দামি জিনিস নিয়ে নেয় এবং দেশের মধ্যে অনেক স্ত্রীলোককে বিধবা করে। 26 তার যাজকেরা আমার বিধানের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং আমার পবিত্র জিনিসগুলিকে অপবিত্র করে; তারা পবিত্র ও যা সাধারণ তাদের মধ্যে কোনও তফাৎ রাখে না; তারা শিক্ষা দেয় যে পবিত্র ও অপবিত্রের মধ্যে কোনও তফাৎ নেই; এবং তারা আমার বিশ্রামদিন পালন করার ব্যাপারে চোখ বুজে থাকে সেইজন্য আমি তাদের মধ্যে অপবিত্র হচ্ছি। 27 সেখানকার কর্মকর্তারা নেকড়ের মতন শিকার ছেঁড়ে; তারা রক্তপাত করে এবং অন্যায় লাভের জন্য মানুষ খুন করে। 28 তার ভাববাদীরা মিথ্যা দর্শন এবং মিথ্যা ভবিষ্যদ্বাণী করে এই কাজের উপর চুনকাম করে। তারা বলে, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন,’ যখন সদাপ্রভু কোনও কথা বলেননি। 29 দেশের লোকেরা অন্যায় দাবি করে অত্যাচার এবং চুরি করে, তারা গরিব এবং অভাবীদের উপর অন্যায় করে এবং ন্যায়বিচার না করে বিদেশিদের উপর অত্যাচার করে।
30 “আমি তাদের মধ্যে এমন একজন লোকের খোঁজ করলাম, যে প্রাচীর গাঁথবে এবং দেশের পক্ষ হয়ে আমার সামনে প্রাচীরের ফাটলে দাঁড়াবে যেন আমাকে দেশটা ধ্বংস করতে না হয়, কিন্তু কাউকে পেলাম না। 31 এই জন্য আমার ক্রোধ আমি তাদের উপর ঢেলে দেব এবং আমার জ্বলন্ত ক্রোধের আগুনে তাদের পুড়িয়ে ফেলব, তারা যা করেছে তার ফল তাদের মাথার উপর দেব, এই কথা সার্বভৌম সদাপ্রভু বলেন।”